রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের সাতরাস্তা এলাকায় ছয় দফা দাবিতে ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী সড়ক অবরোধ করেছেন।
আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন বলে প্রথম আলোকে জানান তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী শামীমুর রহমান।
বেলা সোয়া তিনটার দিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সড়ক ছাড়েননি। যানজটও কমেনি। ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল প্রথম আলোকে বলেন, দাবি পূরণে সরকারের আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা সড়ক ছাড়বেন না।
ওসি গাজী শামীমুর রহমান বলেন, অবরোধের কারণে সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
সড়ক অবরোধের কারণে আজ দুপুর ১২টা থেকে বেলা সোয়া ১টা পর্যন্ত এই প্রতিবেদন লেখার সময় ফার্মগেট থেকে কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত প্রায় পুরো রাস্তাই যানজটে স্থবির হয়ে আছে। গুগল ম্যাপে এই রাস্তাটি পুরো লাল দেখাচ্ছিল। এছাড়া মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, মগবাজার, ইস্কাটন, হাতিরঝিলের আশপাশের সড়কগুলোও লাল হয়ে আছে। অর্থাৎ, এসব রাস্তায় যানজট তীব্র। বেলা সোয়া তিনটার দিকেও যানজটের পরিস্থিতি একই ছিল।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার তানিয়া সুলতানা প্রথম আলোকে জানান, কারিগরি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে বিজয়সরণি উড়ালসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য এলাকাগুলোতেও যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
এফডিসি মোড়ে বেলা দেড়টার দিকে তীব্র যানজট দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন সেখানে উপস্থিত প্রথম আলোর প্রতিবেদক আহমদুল হাসান। তিনি জানান, তিনি দীর্ঘক্ষণ ধরে মোটরসাইকেল নিয়ে এক জায়গায় থেমে আছেন।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—২০২১ সালে বিতর্কিত নিয়োগপ্রাপ্ত সব ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের কারিগরি অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান থেকে দ্রুত স্থানান্তর করতে হবে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চার বছর মেয়াদি নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রতিটি সেমিস্টার (পর্ব) পূর্ণ মেয়াদি (ছয় মাস) করতে হবে। উপসহকারী প্রকৌশলী পদে (১০ম গ্রেড) ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ছাড়া অন্য কেউ আবেদন করতে পারবেন না এবং এই পদ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য সংরক্ষিত রাখতে হবে।
এছাড়া, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সংস্কার করে কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত কোনো জনবল রাখা যাবে না। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বিতর্কিত নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করে সব শূন্য পদে কারিগরি জনবল নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষক সংকট দূর করতে হবে। উচ্চশিক্ষার সুযোগ বাড়াতে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের জন্য প্রস্তাবিত চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শতভাগ আসন নিশ্চিত করতে হবে—এসবই তাঁদের দাবির অন্তর্ভুক্ত।